মাদক গ্রহণ প্রতিরোধে করণীয়
সাধারণত মাদকের সহজলভ্যতা মানুষকে মাদকের প্রতি আকৃষ্ট করে। এ ছাড়া আরো কিছু কারণ রয়েছে মাদকের প্রতি একজন ব্যক্তির আকৃষ্ট হওয়ার।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩২০৬তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : পরিবারের এই ভালোলাগার জগৎ থেকে বেরিয়ে মাদকের প্রতি আসক্তির জগতে প্রবেশ করে কীভাবে, কোন বয়সে?
উত্তর : অনেক রকমের কথাই এ নিয়ে চালু রয়েছে। আমাদের দেশেও গবেষণা হয়। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশ্বের বড় বড় গবেষণাগুলো গ্রহণ করি। অনেক কারণ রয়েছে। একটি ছেলে বা মেয়ে যখন বড় হয়, যখন তার স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সময়টা চলে আসে, তখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বয়স এটা। যখন মানুষ মনে করে আমি স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারব, তখন মানুষ মনে করে আমি স্বাধীনভাবে অনেক কাজ করতে পারব।
এই সময় অন্য যারা একই বয়সে থাকে, তাদের সঙ্গে আগ্রহবশত, কৌতূহলী হয়ে মাদকগ্রহণ শুরু করে। দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে তারা যখন শুরু করে, কখনো ভাবে না এটা আসক্তিতে পরিণত হয়ে যাবে। বেশিরভাগই ভাবে এটি কোনোভাবে আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। আমি এটাকে নিয়ন্ত্রণ করব। বেশিরভাগই মনে করে এটা কোনো বিষয়ই নয়। তবে শেষ পর্যন্ত তারা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। সেখানে গিয়ে তার এই সমস্যাটা শুরু হয়ে যায়। বিনোদন,পারিবারিক বিনোদন এসবের পাশাপাশি কিন্তু এই বিষয়টি চলতে পারে। আর যেসব পরিবারে আগে থাকে ইতিহাস রয়েছে, সেখানে বেশি হয়। যেই সব পরিবারে ঝগড়া বেশ থাকে, কোনো গঠন কাজ করে না, কোনো শৃঙ্খলা কাজ করে না, সেখানে বেশি হয়। অনেক সময় অন্য মানসিক রোগের কারণে কিন্তু মাদকাসক্তিতে জড়ানোর আশঙ্কা বেশি থাকে। আবার অনেকে মনে করে যে আমার একটি মানসিক চাপ, মন খারাপ আমি একটু নেশা করে আসি। এটাও কিন্তু খুব ভালো কিছু নয়। তার যে চিন্তার জগৎ সেটা সঠিকভাবে বাড়ে না বলেই কিন্তু সে এটা করে। কারণ, এটা ক্ষতিকর। পরিবার যদি তাকে এই তথ্য দেয় যে এটা করা ঠিক নয়, তাহলে কিন্তু সে করার কথা নয়। আসলে অনেক ফ্যান্টাসির (কল্পনা) মধ্যে তারা এই কাজটি করতে পারে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশে এই মুহূর্তে প্রচলিত মাদকদ্রব্যগুলো কী, যেগুলো বেশি ব্যবহার হচ্ছে?
উত্তর : আমরা যখন ক্যারিয়ার শুরু করি ২০০২ বা ২০০৩ সালের দিকে, তখন যে ধরনের মাদক পাওয়া যেত, এখন এগুলো কিন্তু কমে এসেছে। তখন বিভিন্ন ট্যাবলেট খেত, ফেনসিডিল খেত, মদও ছিল, বিভিন্ন রকম বাংলা মদ ছিল। ঘুমের টেবলেট খেত। ইস্পিরিট খেয়ে মারা যেত। এগুলো কিন্তু এখন অনেক কমে এসেছে। এখন যেটি রয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হলো ইয়াবা। মাঝখানে হেরোইন ছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইয়াবা, আর গাঁজা। গাঁজা দীর্ঘমেয়াদি নেশার দ্রব্য।