ইউরিক এসিড : খাওয়া-দাওয়ায় সতর্কতা

আজকাল অনেকেরই রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে দেখা যায়। পায়ের তালুতে ব্যথা, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্যথা বেশি অনুভব করলে চিকিৎসকরা রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন।
সুনির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে রক্তের ইউরিক এসিড বেশি পাওয়া গেলেই প্রয়োজন হয় ডায়েট। ইউরিক এসিডের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসকরা ওষুধ দেন। পাশাপাশি ইউরিক এসিড কমাতে ডায়েট করা খুব জরুরি। ওষুধ দিয়ে ইউরিক এসিড কমলেও ডায়েট না মানলে তা আবার বেড়ে যেতে পারে।
সাধারণত রক্তের ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে, পিউরিনযুক্ত খাবার ও অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হয়।
দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন, বিশেষ করে ডাল ও বিচি এড়িয়ে চলতে হয়। রক্তের ইউরিক এসিড বেশি বেড়ে গেলে ডিমের কুসুমও কিছু সময় বাদ দিতে হয়। সামুদ্রিক মাছ কিছু সময় না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে প্রোটিনের চাহিদা পূরণে মিঠাপানির মাছ, ডিমের সাদা অংশ, দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মুরগির মাংস পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে। কবুতরের মাংস, লাল মাংস, কলিজা, মগজ ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে।
শাকসবজি শরীরের জন্য অনেক উপকারী হলেও বেশ কিছু শাকসবজি, বিশেষ করে পিচ্ছিল সবজি ও লাল রঙের সবজি যেমন—বিট, টমেটো, গাজর, কচুরমুখি, ঢেঁড়স, পুঁইশাক, পালংশাক ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হয়। সবুজ পানীয় সবজি খাওয়া ভালো।
মদ্যপান করা যাবে না। পাশাপাশি ক্যাফেইন জাতীয় বেভারেজ খাওয়া যাবে না। যেমন : চা, কফি, কোমল পানীয় ইত্যাদি।
রক্তের ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে যেকোনো ফল পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে।
ওজন বেশি না থাকলে কার্বোহাইড্রেট খাওয়া যাবে। কারণ, ভাত, আলু, সাদা আটার রুটি, নুডলস ইত্যাদি তেমন ক্ষতিকর নয়।
পানি ইউরিক এসিড কমাতে ওষুধের মতো কাজ করে। তাই কিডনিতে কোনো সমস্যা না থাকলে পানি একটু বেশি পান করলে ভালো।
ওষুধ ও ডায়েট ইউরিক এসিড কমাতে সম্মিলিত কাজ করে। তবে রক্তের ইউরিক এসিড অল্প বাড়লে শুধু ডায়েটেই তা কমানো সম্ভব। তাই রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পাশাপাশি একজন পুষ্টিবিদের কাছে যেতে হবে।
লেখক : পুষ্টিবিদ, থাইরোকেয়ার বাংলাদেশ।