দাঁতের ফিলিং কি জরুরি? গবেষণা কী বলে
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/05/08/photo-1557303956.jpg)
দাঁত ক্ষয়ের চিকিৎসায় ফিলিং একটি প্রচলিত পদ্ধতি। তবে দাঁতে গর্ত ও ভরাট করার এ বিষয়টি অনেকেই ভয় পায়। তাই দন্ত্য চিকিৎসকদের কাছে যেতে অস্বস্তিবোধ করে।
তবে অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের সাত বছর ধরে করা একটি গবেষণায় বলা হয়, ফিলিং করা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। মূলত দাঁতের সুরক্ষায় ‘নো ড্রিল’ পদ্ধতির মাধ্যমে ‘ফিল অ্যান্ড ড্রিল’ না করেই থাকা যেতে পারে। আসলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফিলিংয়ের কোনো প্রয়োজন পড়ে না।
বিজ্ঞানবিষয়ক ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্ট প্রকাশ করেছে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।
২০১৫ সালে গবেষণাটির প্রধান গবেষক ওয়েনডেল বলেন, ‘দাঁতের রোগীদের জন্য ফিলিং একটি অপ্রয়োজনীয় বিষয়। কারণ, দাঁত ক্ষয়ের ক্ষেত্রে এটি সব সময় প্রযোজ্য নয়।’
ইউনিভার্সিটি অব সিডনির এই গবেষক বলেন, ‘গবেষণাটি এই বার্তাই দেয় যে চিকিৎসকদের দাঁত ক্ষয়ের ব্যবস্থাপনায় কিছু পদ্ধতিগত পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমান প্রচলিত ব্যবস্থার তুলনায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনেক বেশি উপকারী।’
গবেষণাটি ২০১৫ সালে কমিউনিটি ডেন্টিসট্রি অ্যান্ড ওরাল এপিডেমিওলজিতে প্রকাশ হয়। গবেষণামতে, দাঁত ক্ষয় অতটা দ্রুত হয় না, যতটা চিকিৎসকরা ভাবেন।
আসলে দাঁত ক্ষয় খুব দ্রুত হয়—এমনটাই প্রচলিত ধারণা। তাই সাধারণ প্র্যাকটিসে প্রাথমিক অবস্থায় ক্ষয় ধরা পড়লে দাঁতের সুরক্ষার জন্য ফিলিং করে দেওয়া হয়।
‘তবে দাঁত ক্ষয় সব সময় দ্রুত হয় না’ বলেন ইভান ও তাঁর দল। তাঁরা বলেন, ‘বরং দন্ত্য চিকিৎসকরা যতটুকু ভাবেন, এর তুলনায় অনেক ধীরগতিতে ক্ষয় হয়।’
দাঁতের ভেতরের অংশ বা ডেনটিন থেকে বাইরের অংশ বা অ্যানামেল-এ আসতে এর অন্তত চার থেকে আট বছর লেগে যায়। তাই ক্ষয় পুরোপুরি নির্ণয়ও হয় দেরিতে। আসলে সাধারণত দাঁত ক্ষয়ের ক্ষেত্রে যখন ফিলিং করার প্রয়োজন পড়ে না, তার আগেই ফিলিং করা হয়।
গবেষকরা বলেন, ‘ক্যারিজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (সিএমএস) মাধ্যমে দাঁত সম্পূর্ণ ক্ষয় হওয়া প্রতিরোধ করা যায় এবং ফিলিংয়ের অবস্থা পর্যন্ত যাওয়ার আগেই এটি রোধ করা যেতে পারে।’
এক্স-রে করে দাঁত ক্ষয়ের ঝুঁকি ধরা পড়লে এবং দাঁত সম্পূর্ণভাবে ক্ষয় হয়ে আসার আগ পর্যন্ত ফিলিং না করে ফ্লুরাইড ভারনিস (ফ্লুরাইডের অত্যন্ত ঘনীভূত অবস্থা। এটি চিকিৎসকদের মাধ্যমে দাঁতের উপরিভাগে দিতে হয়।) দিয়ে চিকিৎসা করা যায়।
ইভান ও তাঁর সহকর্মীরা দেখেন, ক্ষয়ের ঝুঁকি ৩০ থেকে ৫০ ভাগ প্রতিরোধ করা যায় সিএমএস পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে।
গবেষক ইভান বলেন, ‘দাঁত ক্ষয় প্রাথমিক অবস্থায় থাকলে একে বন্ধ করা যায় এবং ফিলিং করার প্রয়োজনীয়তা নাটকীয়ভাবে কমে যায়। দাঁত সম্পূর্ণ ক্ষয় হয়ে গেলেই কেবল ফিলিং করার প্রয়োজন পড়ে।’
দাঁত ক্ষয় রোধে রোগীদের বাসায় ব্রাশ করার সঠিক পদ্ধতি জানতে হবে এবং চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। এভাবেও সিএমএস পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করা যায়।
আর আপনি এই পদ্ধতির প্রতি আস্থা না রাখতে পারলে এবং ভবিষ্যতে জটিলতা আরো বাড়তে পারে, এমনটা ভাবলে ফিলিং করার একটু কষ্ট তো আপনাকে পোহাতেই হবে। তাই না?