রোজায় এসিডিটি কমাতে ছয় পরামর্শ
রোজা সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস। এ মাসে রোজাদারদের জীবনযাপনের ধরন, খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের স্বাভাবিক চক্রের অস্বাভাবিকতার কারণে রোজায় বুক জ্বলা বা এসিডিটির মাত্রা বেড়ে যায়।
এতে বুকে ও পেটে জ্বালা-যন্ত্রণা, অস্বস্তিকর অনুভূতি, হালকা পেটব্যথা, বমি ভাব কিংবা বমি দেখা দিতে পারে। রোজার সময় দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা কিংবা ইফতার ও সেহরি অল্প সময়ে বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলা, বিশেষ করে ইফতারের সময় ভাজাপোড়া এবং বেশি তেল-মসলাসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, খাদ্যে ভেজাল বা ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি, দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ প্রভৃতি কারণেও রোজায় বুক জ্বলা বা এসিডিটি সমস্যা হতে পারে।
রোজায় বুক জ্বলা বা এসিডিটি প্রতিরোধের উপায়
১. রোজায় অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমিত ও সুষম খাদ্য খান। সহজে হজম হয়, বিপাক হয় এমন খাবার খাদ্যতালিকায় রাখুন। তেল-মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন। একবারে বেশি পরিমাণে না খেয়ে ঘন ঘন অল্প অল্প করে খেতে পারেন। বেশি ভরাপেটে থাকলে যেমন এসিডিটি হয়, তেমনি অস্বস্তিবোধও হতে পারে।
২. ইফতার ও সেহরিতে তাড়াহুড়া করে খাবেন না। খাওয়ার সময় তা ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন। সব খাবারে সবার এসিডিটি বাড়ে না, তবে আপনার যেসব খাবার খেলে এসিডিটি বাড়ে, সেগুলো এড়িয়ে চলুন। একই সঙ্গে ভাজাপোড়া ও মসলাযুক্ত খাবার কম খান।
৩. ইফতার ও সেহরির মধ্যে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। খাবারের শেষে চা-কফি কিংবা ক্যাফেইন পান করা থেকে বিরত থাকুন। এগুলো হজমে সমস্যা করে এবং পেটে এসিডিটির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ তালিকায় রয়েছে কোমল পানীয় ও চকলেট। যাদের খুব বেশি সমস্যা হয়, তারা অ্যান্টাসিড ওষুধ অথবা সিরাপ খেতে পারেন কিংবা সিরাপটি শুধু রোজার মাসের জন্যই নিয়মিত খেতে পারেন।
৪. সেহরিতে অতিরিক্ত লবণজাতীয় খাবার, যেমন—আচার, সলটেড বিস্কুট ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়। সেহরিতে অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। ভাজাপোড়া খাবারের পরিবর্তে বেক করা খাবার খেতে পারেন।
৫. রমজান মাস ধূমপান বর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ। ধূমপান কমিয়ে দিন। পুরো রমজান মাস নিজেকে ধূমপানমুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন।
৬. বাইরের খোলা, অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন। মুখরোচক হলেও এগুলো আপনার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ইফতারের খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শোবেন না। মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। এতে রোজায় বুক জ্বালা বা এসিডিটির সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যাবে।
লেখক : সভাপতি, বিশুদ্ধ খাদ্য চাই এবং সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।