ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি সারাতে লেজার চিকিৎসা
ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি একটি জটিল সমস্যা। ডায়াবেটিস যাঁদের আছে, তাঁদের চোখে এই সমস্যা হতে পারে। তবে লেজারের মাধ্যমে চিকিৎসা করে সমস্যাটি কিছুটা রোধ করা যায়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৩৪৬তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন পিরোজপুর সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ডা. মো. সায়েদুল হক।
প্রশ্ন : রেটিনোপ্যাথি হয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসার কী কী ব্যবস্থা রয়েছে?
উত্তর : ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হলে চোখ ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যায়। এটারও একটি ভিত্তি আছে। রক্তনালিগুলো যে পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন যে নালি আসছে, সেগুলো যখন হেমোরেজিক পর্যায়ে চলে আসবে, তখন যেকোনো অবস্থায় রক্তক্ষরণ ঘটবে। তার আগের যেই পর্যায়টি, একে আমরা বলি নন-প্রলিফারিটিভ। ওই পর্যায়ে লেজার দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। লেজার দিয়ে আমরা টিস্যু পুড়িয়ে দিই।
রেটিনার টিস্যু পুড়িয়ে দিই। আমরা বলি, সরবরাহ যেহেতু কমে গেছে, তার চাহিদাটা কমিয়ে দিতে হবে। যদি আমরা এর চাহিদা কমিয়ে দিই, তখন সেটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আসবে। তাহলে তখন রক্তনালির পরিবর্তনটা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকল। লেজার দিয়ে যদি পাঁচ বছর ভালো রাখা যায়, তাহলে ভালো। যদি দেখা যায়, পাঁচ বছর পর আবার হয়েছে, আবার চিকিৎসা করতে হবে। লেজার দিয়ে বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে আমরা একে যদি স্থিত অবস্থায় রাখতে পারি, তার সামনের যে অন্ধত্ব সেটা যদি পাঁচ বছর, ১০ বছর, ১৫ বছর পিছিয়ে দিতে পারি, তাহলে তাকে আরো কিছুদিন কর্মক্ষম রাখতে পারছি। এটিই আসলে প্রধান উদ্দেশ্য।
প্রশ্ন : লেজার নিয়ে কিছু ভীতি সাধারণ মানুষের মধ্যে কাজ করে। এ সম্পর্কে একটু বলুন এই ক্ষেত্রে?
উত্তর : এ ক্ষেত্রে সে রকম ভীতি নয়, রোগী ধরে নেয় অত্যাধুনিক চিকিৎসার মধ্য দিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে, তাহলে হয়তো অবস্থা খারাপ। সে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যায়। এটা একটা সমস্যা করে।
আরেকটি হলো, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কাদের থাকে না? যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে একটু অলস ধরনের। নয়তো খাদ্য নিয়ন্ত্রণে থাকলে, হাঁটার অভ্যাস করলে, ধূমপান না করলে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে, তার খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হবে না। অনেকে নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি জানা থাকলেও বিষয়টি মেনে চলেন না। এর মানে তাঁর আচরণগত একটু সমস্যা রয়েছে। সে এতটা ঐকান্তিক প্রকৃতির নয়। এ জন্য সব সময় তাঁর ভেতর নেতিবাচক দিকগুলো আসতে থাকে।
লেজার দেওয়ায় ঝুঁকির আশঙ্কা নেই। অনেকে ভাবে, লেজার দিলে ভালো হয়ে যাবে। বিষয়টি কিন্তু আসলে সেটি নয়। যতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত, এটুকু তো হয়েই গেছে। এর পরে যে ক্ষতি হবে, সেটিকে প্রতিরোধ করা, পিছিয়ে দেওয়া। তবে রোগীর আশা থাকে, তাঁর এটা বোধ হয় একবারে ভালো হয়ে যাবে। তবে বিষয়টি সেটি নয়।
প্রশ্ন : লেজার তো এখন বাংলাদেশে করা হচ্ছে?
উত্তর : হ্যাঁ, হচ্ছে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির চিকিৎসাগুলো আমাদের দেশে রয়েছে। হয়তো পরিমাণে কম, আরো লাগবে। তবে চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে।