হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট মানেই কি অ্যাজমা?
শ্বাসকষ্ট, কাশি, বুকে চাপ অনুভূত হওয়া ইত্যাদি অ্যাজমার লক্ষণ। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিনের ২৩৬৪তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. রফিক আহমেদ। বর্তমানে তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বক্ষব্যাধি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : অ্যাজমা রোগটি আসলে কী?
উত্তর : ফুসফুসের অনেক রোগ আছে। অ্যাজমা মানে হলো হাঁপানি রোগ। কিন্তু হাঁপানি যে শুধু অ্যাজমার কারণেই হয়, সেটি নয়। সিওপিডি আছে, নিউমোনিয়া আছে—এসব শুধু ফুসফুসজনিত কারণে হয়। আবার হার্টের কিছু কারণেও শ্বাসকষ্ট হয়। যেমন : একিউট লেফট ভ্যান্টিকুলার ফেইলিউর, মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশন, এগুলো হলো কার্ডিয়াক কারণ। আবার অন্য কিছু আছে, যেমন—এনিমিক হার্ট ফেইলিউর। শরীরে রক্ত অনেক কমে গেছে। তাহলেও শ্বাসকষ্ট হবে। আবার অধিক মোটা মানুষের শ্বাসকষ্ট হয়।
সুগারের মাত্রা যদি বেশি বেড়ে যায়, তাহলেও শ্বাসকষ্ট হয়। আবার ফাংশনাল ডিজঅর্ডার বলে একটি বিষয় রয়েছে, মানে রোগ নেই এর পর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাই হাঁপানি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে অ্যাজমাই এর একটি কারণ নয়।
প্রশ্ন : অনেক শ্বাসকষ্টের কথা বললেন। অ্যাজমার কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, সেটি বোঝার কি কোনো উপায় আছে?
উত্তর : আমরা বলি কার্ডিনাল ফিচার। কিছু লক্ষণ দেখলে বোঝা যাবে অ্যাজমা হয়েছে। যেমন : শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, বুকের ভেতর শোঁ শোঁ বা চি চি শব্দ করে, কাশি থাকবে, আর বুক ব্যথা করতে পারে, বুক ভার লাগে।
প্রশ্ন : রোগীরা সব সময় কি এই অভিযোগ নিয়েই আসে?
উত্তর : রোগীরা প্রধাণত বলে শ্বাস নিতে পারছি না। কাশি যাচ্ছে না।
প্রশ্ন : সাধারণত অ্যাজমায় কারা বেশি ভুগে থাকেন?
উত্তর : এক বছরের কম বয়সের কোনো বাচ্চার যদি হাঁপানি রোগ হয়, বোঝা যাবে না। এক বছর পর আমরা বুঝতে পারি, এটা কি অ্যাজমা, ব্রঙ্কিউলাইটিস, নিউমোনিয়া নাকি সিওপিডি। অ্যাজমা আর সিওপিডি দুটো পাশাপাশি রোগ। কিন্তু দুটো সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। অনেক সময় লক্ষণগুলো একইভাবে প্রকাশ পায়।
আমরা তাদের ইতিহাস নেই। জানব যে তার বাবা-মা, ভাইবোন, ছেলেমেয়ে তাদের অ্যাজমা আছে কি না। অনেক সময় ওষুধ খেলেও রোগটি একা একাই কমে-বাড়ে।
প্রশ্ন : অ্যাজমা রোগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য কি কোনো পরীক্ষা আছে?
উত্তর : কিছু সাধারণ পরীক্ষা করি। বুকের এক্স-রে করি। অ্যাজমা রোগীর এক্স-রে স্বাভাবিক থাকতে পারে। স্পাইরোমোট্রি নামে একটি যন্ত্র আছে, সেটি দিয়ে নির্দিষ্টভাবে পরীক্ষা করি। যখন মনে করি রোগ নির্ণয়ে সমস্যা হচ্ছে, তখন এটি ব্যবহার করি। ইতিহাসই আসলে যথেষ্ট রোগটি বোঝার জন্য।