ডেঙ্গুতে যেসব নিউরোলজিক্যাল সমস্যার প্রতি লক্ষ্য রাখা দরকার
ডেঙ্গু হচ্ছে ভাইরাসজনিত জ্বর। সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে ডেঙ্গুতে যেসব নিউরোলজিক্যাল সমস্যার প্রতি লক্ষ্য রাখা দরকার, সেই সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে ডেঙ্গুতে নিউরোলজিক্যাল সমস্যার বিষয়ে কথা বলেছেন নিউরো–সাইন্স হসপিটালের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. মুনা তাহসিন।
ডেঙ্গুর সাথে নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়ুবিক সমস্যাগুলোতে আপনি কতটুকু জোর দেবেন,কতটুকু লক্ষ্য রাখা দরকার বলে আপনি মনে করেন, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজমুল হক বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনায় যে সমস্যা হচ্ছে, সেটি হলো– শুরুতে দুই একদিন জ্বর থাকে, তারপর ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে চলে যায়, সেজন্য রোগীরা মারা যায়। প্রথমদিকে, এতো অল্প জ্বরের কারণে রোগীরা ভর্তি হতে চায় না। এ কারণে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী মারা যাচ্ছে বেশি।
হাসপাতালে রোগী ভর্তি হলেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সঠিক ব্যবস্থাপনা ডেঙ্গুর ব্যবস্থাপনা খুবই নগণ্য। ব্যবস্থাপনা কার্যকরভাবে ও দক্ষতার সাথে দেওয়া হলে, রোগীরা অসুস্থ এবং মারাও যাবে না। কিন্তু যেহেতু জ্বরটা খুব কম সময় থাকে। আর রোগী জ্বর থেকে চলে যাওয়ার পরে বেশি অসুস্থ হয়। রোগীরা মনে করে এখন জ্বর কমে গেছে। শরীরটা ভালো আছে। কেন তারা হাসপাতালে ভর্তি হবে। এ ভাবনার কারণে রোগী অসুস্থ হয় এবং মারা যায়।
ডা. নাজমুল হক বলেন, যদি কোনো রোগীর জ্বর চলে যাওয়ার পরে মাথা ব্যথা শুরু হয় বা তার তীব্র মাথা ব্যথা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাকে ডেঙ্গু সাসপেক্ট করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে এবং দেখতে হবে রোগীর প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে কিনা। যদি লক্ষ্য করা যায়, রোগী একটু অজ্ঞান বা এলোমেলো কথা বলছে। অনেক সময় হাত, পা ও পেটের পাশাপাশি মস্তিষ্কেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। সেজন্য সিটি স্ক্যান করাতে হবে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী যদি এলোমেলো কথা বলে কিংবা বোধশক্তি কমে যায়। সেক্ষেত্রে নিউরোলজিক্যাল সমস্যাগুলো আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
ডা. নাজমুল হক আরও বলেন, ডেঙ্গু রোগীর ব্লাড লিকেজের কারণে ব্লাড প্রেসার কমে যায়। এই ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার কারণে তাকে ততক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসকরা তাকে ফ্লুইড, স্যালাইন বা ব্লাড দিয়ে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। অনেক সময় ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আসার প্রক্রিয়াটা একটু বিলম্বিত হয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমাদের মস্তিষ্ক খুব সেনসিটিভ। রোগী যখন একটি সময়ের জন্য ব্লাড না পায়। তখন মস্তিষ্কে হাইপোক্সিক-ইসকেমিক এনসেফালোপ্যাথি হয়। যেটা থেকে রোগী ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হলেও তার এলোমেলো ভাবটা থেকে যায়।
এই স্নায়ুবিক জটিলতাগুলো পরবর্তীতে ভালো হতে কতদিন সময় লাগে, এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপরের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।