পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশনের পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষণা

শিশু বিশেষজ্ঞদের সংগঠন বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশনের (বিপিএ) পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষাণা হয়েছে। দীর্ঘদিন শিশুস্বাস্থ্য খাতের নানা বঞ্চনা নিরসনে ও বৈষম্যবিরোধী সংস্কারের দাবি নিয়ে আজ রোববার (২৩ মার্চ) সরকারি হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞরা শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালকের কনফারেন্স রুমে একটি কমিটি ঘোষাণা করে। এ কমিটির সভাপতি করা হয় অধ্যাপক ডা. আব্দুল হান্নান। এছাড়া মহাসচিব ডা. ইয়ামিন শাহরিয়ার ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে ডা. মোস্তাফিজুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অন্যদিকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ই-ব্লকের কনফারেন্স রুমে বিএমইউ ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিয়ে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির কমিটির সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ডা. মো. সেলিমুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে ডা. আতিয়ার রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
বিএমইউ ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত কমিটির সভাপতি ডা. মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশনের (বিপিএ) পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। আমি কথা দিচ্ছি, আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করবো। কে সরকারি, কে পিজি, কে শিশু, কে লাল, কে নীল আমরা এটা দেখবো না। দেখা উচিতও না। আমরা সবাই পেডিয়াট্রিক মেডিসিনের, যেটি একটি পেশাগত সাংগঠন। এখানে জ্যেষ্ঠদের সম্মান করা উচিত, অনুজদের স্নেহ করা উচিত। আমরা যদি অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকদের সম্মান না করি, এখানে যদি রাজনীতির ঝনঝনানি বেশি হয়, তাহলে মুশকিল হবে।’
নেতৃত্বের জন্য দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক তৎপরতা জরুরি উল্লেখ করে ডা. সেলিমুজ্জামান বলেন, হঠাৎ করে এসে কেউ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারি হতে পারে না। একজন চিকিৎসককে প্রথমে জুনিয়র কনসালটেন্ট হতে হয়, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, তারপর অধ্যাপক হন। এমডি-এমএস, এফসিপিএস করার পরদিনই কিন্তু অধ্যাপক হওয়া যায় না। তেমনিভাবে বিপিএতে প্রথমে সদস্য নির্বাচিত হতে হয়। যারা কখনো কোনো দায়িত্ব নেননি, নির্বাচন করেননি, সদস্যদের সমর্থন পাননি, তারা যদি হঠাৎ পড় পদ চান, তাহলে হলো না। তিনি আসতেই পারেন, তার যোগত্যা আছে, তবে তাকে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসতে হবে।’
অধ্যাপক ডা. সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘সরকারি চিকিৎসকদের পদায়নের কোনো নিশ্চয়তা নেই। আজ আছেন, নয় মাস পর তিনি নাও থাকতে পারেন। তাকে হয় তো মানিকগঞ্জ পদায়ন করা হলো। সভাপতি-সেক্রেটারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। বিপিএর সংবিধান অনুযায়ী, সভাপতি, সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষকে ঢাকার হতে হয়। সুতরাং যারা বদলিযোগ্য চাকরি করেন, তাদের এই পদে না আসাই ভালো।’
অন্যদিকে, সারা দেশের সরকারি হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত আরেকটি অংশের মহাসচিব ড. ইয়ামিন শাহরিয়ার বলেন, ‘দীর্ঘদিন একটি সিন্ডিকেট করে কমিটি করে আসছে পিজি ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা, তবে সেটাও ছিল অকার্যকর। আমরা ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারের বিদায়ের পর একসাথে বসে নতুন করে একটি আহ্বায়ক কমিটি করি। সে কমিটি করার সময় তারাও ছিলেন। সেখানে আহ্বায়ক করা হয় অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব হন বেলায়েত হোসেন ঢালি। তারাই আজ সারা দেশ থেকে আসা প্রায় দুই শতাধিক শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সম্মতিতে একটি কমিটি করে দেয়। যেটি ভ্যালিড। এছাড়া অন্যগুলোর কোনো বৈধতা আছে বলে আমরা মনে করি না।’
উল্লেখ্য যে, ১৯৯২ সালে দেশের শিশু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত হয় বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশন (বিপিএ)।