গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে দলগত ধর্ষণ : আটক আরও ৭
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ছাত্রীকে দলগত ধর্ষণের ঘটনায় আরও সাত জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিনগত রাতে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় জনকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), আর পুলিশের হাতে আটক হন একজন।
র্যাবের হাতে ছয় জন আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ‘আজ শনিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।’ র্যাবের দাবি, আটক করা ব্যক্তিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
গত বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে বশেমুরবিপ্রবির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে উত্তাল হয়ে ওঠে গোপালগঞ্জ। ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী সদর থানা ঘেরাও করেন। একই সঙ্গে তাঁরা তিন দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দেন।
দলগত ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী তাঁর বন্ধুর সঙ্গে সদর উপজেলার নবীনবাগের হেলিপ্যাডের সামনে থেকে হেঁটে আসছিলেন। পথিমধ্যে এক অটোরিকশা থেকে অন্তত সাত জন তাঁদের জোর করে তুলে নেয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে। সেখানে ওই ছাত্রীর সহপাঠীকে মারধর করে অপহরণকারীরা। পরে ছাত্রীকে দলগত ধর্ষণ করে।
পরদিন বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়ায় শুরু হয় অবরোধ কর্মসূচি। এতে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। ১১ ঘণ্টা অবরোধের এক পর্যায়ে স্থানীয় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরা লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর সড়কে যানচলাচল শুরু হয়।
এদিকে ধর্ষণের সন্দেহে বৃহস্পিতবার তিন জনকে আটক করে পুলিশ। এঁরা হলেন— শহরতলীর সোনাকূড় গ্রামের পিয়াল (২২), সুইপার কলোনীর অন্তর (২২) ও জীবন (২৩)। এ ঘটনায় অন্তর ও জীবনের মুক্তির দাবিতে সড়কে ময়লা ফেলে বিক্ষোভ করেন হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন। পরে ‘অপরাধী না হলে ছেড়ে দেওয়া হবে’ বলে পুলিশের আশ্বাসে সড়ক ত্যাগ করেন তাঁরা।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার দীর্ঘক্ষণ আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান জানান, ধর্ষকদের আটকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগসহ একাধিক টিম কাজ করছে। খুব দ্রুতই প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এরপর আজ জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের বনগ্রাম থেকে ফরিদ নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে আদালতে নেওয়া নিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আর র্যাবের হাতে আটক হয়েছে আরও ছয় জন। সব মিলিয়ে ছাত্রী ধর্ষণ ঘটনায় আটকের সংখ্যা দাঁড়াল ১০ জন।