বরিশাল-ভোলার সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে পুলিশসহ আহত ১৪
বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলার সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে পুলিশ ২৮ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়েছে। এ ঘটনায় দুই এলাকাবাসী ইট পাথর নিক্ষেপ করলে ভোলা সদর থানার দুই কনস্টেবল আহত হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের ছোড়া শর্টগানের গুলিতে ওই এলাকার চার নারীসহ ১৪ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১২ জনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। বিকেল পৌনে ৫টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবিদুর রহমান।
ওসি বলেন, জেলার মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলার সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই এলাকার সীমান্তবর্তী খালের দুই পাশে লোকজন জড়ো হয়। খবর পেয়ে ভোলা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইনজামুল তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় দুই পাড়ের লোকজন সীমানা বিরোধ নিয়ে ইট-পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। দুই পক্ষের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৮ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে।
এ সময় লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে এলাকাবাসীর ছোড়া ইট-পাথরের আঘাতে ভোলা সদর থানার দুই কনস্টেবল আহত হন। পরে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলের পরিদর্শনকারী ভোলা সদর থানার এসআই জসিম বলেন, দুই গ্রামবাসীর মধ্যে পূর্ব বিরোধ ছিল। এমনকি তারা মাছ ধরা নিয়ে গতকাল বুধবারও দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আজ তাদের সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই ইনজামুল ২৮ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় এলাকাবাসীর ছোড়া ইট-পাথরের আঘাতে দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এদিকে পুলিশের ছোঁড়া শর্টগানের ফাঁকা গুলিতে চার নারীসহ ১২ গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। আহতদের বিকেল পৌনে ৬টায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন চুন্নু হাওলাদারের স্ত্রী সাথী বেগম (৩০), জামাল রাঢ়ির স্ত্রী আমেনা বেগম (৩০), কাশেম হাওলাদারের ছেলে নান্নু হাওলাদার (৪০), দুলাল হাওলাদারের ছেলে রিপন হাওলাদার (২৫), নান্নু হাওলাদারের স্ত্রী আসমা বেগম (৩০), আবুল হোসেনের ছেলে রিয়াজ (৩৫), রহমান হাওলাদারের ছেলে হানিফ (৩৪), দিলু মোল্লার ছেলে আলী হোসেন (১৮), বাবুল গাইনের ছেলে সাইফুল (১৮), বেল্লাল রাঢ়ির ছেলে জামাল রাঢ়ি (৪০), গনি হাওলাদারের ছেলে শাহজাহান (৭০) ও কাঞ্চন মোল্লার স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫০)। তারা সবাই মেহেন্দিগঞ্জের মহিশমারি গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহজাহান বলেন, তাদের সঙ্গে ভোলার চর চটকি গ্রামের বাসিন্দাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে আজ কথা কাটাকাটি হলে ভোলার পুলিশ তাদের পক্ষ নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে আমরা অনেকেই আহত হই।
এ ব্যাপারে জানতে ভোলা সদর থানার (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনকে ফোন দিলে তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভোলা সদর সার্কেল এএসপির সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে আছি।