ব্যবসায়ী নিখোঁজের তিন দিনেও মেলেনি হদিস
পটুয়াখালীতে আল মামুন প্যাদা নামে এক ব্যবসায়ী নিখোঁজের তিন দিন পরও মেলেনি হদিস। গত শনিবার সকালে দোকানের মালামাল কিনতে বাড়ি থেকে শহরের পুরানবাজার যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি।
পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে মামুনকে গুম করার অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং পরে আদালতে মামলা করা হয়। তবে এখনো কোনো হদিস পায়নি পুলিশ। এ ঘটনায় মামুনের পরিবারে চলছে আহাজারি।
আদালতে দায়ের করা মামলা ও থানার জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের বল্লভ গ্রামের মৃত আব্দুল বারেক প্যাদার একমাত্র ছেলে আল মামুন প্যাদা। গত শনিবার সকালে দোকানের মালামাল কিনতে বাড়ি থেকে শহরের পুরানবাজার যাওয়ার কথা বলে বের হন তিনি। কিছুক্ষণ পরই মামুনের ব্যবহৃত ০১৭১৪৫৪৬২৭৩ মোবাইল ফোন থেকে তাঁর চাচাত ভাইয়ের স্ত্রী সালেহা বেগমের ০১৭৬…৫৪৪ নম্বরে কল করে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়। এরপর থেকে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান সালেহা।
বিষয়টি পরিবারের সবাইকে জানালে মামুনের স্বজনরা পুরানবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন। ৬ মার্চ দুপুরে জনৈক আফজাল গাজীর ০১৭৬৫৫৪৯৪৫৮ মুঠোফোন থেকে মামুনের স্ত্রী রুমা আক্তারের ০১৭৫৮…৩১৯ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
অভিযোগে জানা গেছে, মামুন নিখোঁজের আগের দিন দুর্গাপুর গ্রামের জসিম প্যাদা, মনির হোসেন, জাফর প্যাদা, গোলাম মোস্তফা প্যাদা ও আফজাল গংয়ের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয় মামুনের। পরে নিখোঁজের ঘটনায় তাঁদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামুনের স্ত্রী রুমা আক্তার জানান, চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমিজমার ওয়ারিশ নিয়ে মামুনের বিরোধ রয়েছে। তাঁরা বেশ কিছু দিন ধরে মামুনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।
মামুনের মা রেনু বেগম বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে মামুনের আয়েই আমি বেঁচে আছি।’ ছেলেকে ফিরে পেতে সর্বদা বিলাপ করছেন এই বৃদ্ধ মা।
নিখোঁজ মামুনের দুই কন্যা সন্তান তামান্না আক্তার শাম্মি ও নুসরাত জাহান তাসমি জানায়, তাদের দেখভাল করার আর কেউ নেই। তারা তাদের বাবাকে ফিরে পেতে এবং গুম করার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করে পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
এদিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামুনের খোঁজ না মিললে বল্লভ গ্রামের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধনসহ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
পটুয়াখালী সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
নিখোঁজ মামুন পেশায় একজন মুদি ব্যবসায়ী হলেও কিছুদিন আনসার ব্যাটালিয়নে চাকরি করেছেন। তাঁর নিখোঁজ হওয়া নিয়ে পুরো এলাকায় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।