আহত দুই রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করল বিজিবি

কক্সবাজারের টেকনাফে চিকিৎসা নিতে আসায় আটক হওয়া দুই রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে টেকনাফ স্থলবন্দর বরাবর নাফ নদে দুজনকে হস্তান্তর করা হয়। মিয়ানমারের মংডুতে গোলাগুলির ঘটনায় তাঁরা আহত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
টেকনাফে ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদের নেতৃত্বে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
অপরদিকে, মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক চ্য থ্যা জ্য আট সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
মিয়ানমারের দুই নাগরিক হলেন- মংডু টাউনশিপের উত্তরে নাকফুরা এলাকার আনোয়ার কামাল (২৭) ও মো. ইউছুফ (২৮)। এঁদের মধ্যে আনোয়ার কামাল গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।
বিজিবির কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তানভির আহমদ খান জানান, আটক আহত রোহিঙ্গারা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন- তাঁরা গত রোববার সকালে নাকফুরা এলাকায় ক্ষেতে কাজ করার সময় গুলিবিদ্ধ হন। নাফ নদ পার হয়ে টেকনাফে চিকিৎসা নিতে এলে সেদিন সন্ধ্যায় হ্নীলা এলাকায় সড়কের পাশ থেকে তাঁদের আটক করে বিজিবি। পরে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আহত ওই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাকফুরা নদীর খেয়াঘাট পারাপারের কাজ করেন। মংডুর তিনটি বিজিপি ক্যাম্পে হামলা, সংঘর্ষ, লুটপাটের ঘটনার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় ওই দুই রোহিঙ্গা আহত হন।
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার আরো জানান, মিয়ানমারের তিনটি বিজিপি ক্যাম্পে বিদ্রোহী বাহিনীর হামলার পর টেকনাফ সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সীমান্তে বিজিবির টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অপরদিকে, গত তিনদিন মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য, অভিবাসন, ট্রানজিটসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিজিবির নিষেধাজ্ঞার কারণে নাফ নদে মৎস্য আহরণও বন্ধ রয়েছে।
এ ছাড়া মিয়ানমারে আটকেপড়া দুই শিশু ও ১৮ ব্যবসায়ী বাংলাদেশি টেকনাফে ফিরে এসেছে। তবে অভিবাসন পাস নিয়ে আসা দুই শতাধিক মিয়ানমারের নাগরিক এখনো বাংলাদেশে আটক আছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া সীমান্তের বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার আরাকান রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এ ছাড়া দেশটির বলিবাজার সাতঘরিয়াপাড়া এলাকায় গ্রামবাসীর সঙ্গে সেনা সদস্যদের গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।