৫৯ ভুয়া পরীক্ষার্থী আটক, মুচলেকায় ছাড়া
নওগাঁয় সাপাহার সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৫৯ ভুয়া দাখিল পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্র তাদের আটক করা হয়।
তাদের আটকের পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সবার।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে পরীক্ষা চলছে। সেখানে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৭৭৭ পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
আজ সকাল ১০টায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৭৫৭ পরীক্ষার্থী উপস্থিত হয়ে ২০টি কক্ষে আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিচ্ছিল। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শক বেলা ১১টার দিকে খাতায় স্বাক্ষরের সময় বুঝতে পারেন যে, প্রকৃত পরীক্ষার্থীর পরিবর্তে সেখানে ভুয়া পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেনকে জানান। পরীক্ষার্থীর সঙ্গে প্রবেশপত্রে থাকা ছবির কোনো মিল ছিল না। পরে এদের প্রত্যেকের প্রবেশপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। তাদের ভুয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরে তাদের পরীক্ষা স্থগিত করে একটি কক্ষে আটকিয়ে রাখা হয়। একে একে বাড়তে থাকে ভুয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। সাপাহার উপজেলার আটটি মাদ্রাসার ৫৯ ভুয়া পরীক্ষার্থী আটক করা হয়। এর মধ্যে ১৫ জন ছেলে এবং ৪৪ জন মেয়ে। নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সচেতন নাগরিকরা।
মাদ্রার সুপার লোভ দেখিয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দিতে এসব শিক্ষার্থীকে এনেছেন বলে জানায় আটক তিন ভুয়া পরীক্ষার্থী।
সাপাহার উপজেলার সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেন বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শক প্রবেশপত্রের (অ্যাডমিট কার্ড) সঙ্গে পরীক্ষার ছবির কোনো মিল না থাকায় বিষয়টি সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ হোসেনকে জানানো হলে তিনি পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাদের আটক করেন। পরে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আটটি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন ইউএনও।
সাপাহার উপজেলার সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেন নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় প্রক্সি শিক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে তাদের সুনাম রাখতে এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন। ওই সব মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
ইউএনও মো. মাসুদ হোসেন বলেন, ভুয়া পরীক্ষার্থী প্রমাণিত হওয়ায় কক্ষ পরিদর্শকরা ৫৯ পরীক্ষার্থীকে (১৫ ছেলে এবং ৪৪ মেয়ে) বহিষ্কার করেছেন। পরে আটক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মুচলেখা নিয়ে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। যে আটটি প্রতিষ্ঠান এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের সুপারদের তলব করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।