শোকে উৎসবে নায়ক মান্না

‘মান্না উৎসব-২০১৫’ শিরোনামে প্রয়াত অভিনেতা মান্না স্মরণে আগামী ৬ মার্চ মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। মান্নাকে শুধু শোকের মাধ্যমে নয়, উৎসবের মাধ্যমেও স্মরণ করতে চাওয়ার কথা বললেন মান্নার সহধর্মিণী শেলী মান্না। গতকাল ৯ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে বিএফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মান্না ফাউন্ডেশনের অধ্যক্ষ আবদুস সামাদ খোকন, চলচ্চিত্র তারকা ফেরদৌস, অমিত হাসান, আমিন খান, মিশা সওদাগর, ইমন, শিমলা, কণ্ঠশিল্পী ইবরার টিপু, মেহরাবসহ সংস্কৃতি অঙ্গনের শিল্পীরা।
শেলী মান্না বলেন, ‘দেশ-বিদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে এ উৎসব। তিনি আরো বলেন, ‘মান্না নায়ক হিসেবে যেমন জনপ্রিয় ছিলেন, তেমনি মানুষ হিসেবেও ছিলেন একজন বড় মনের। নায়ক মান্নাকে মানুষের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের এই মান্না ফাউন্ডেশন। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন। আগামী দিনেও আমাদের কাজ চলতে থাকবে।’ সে সঙ্গে ‘মান্না স্মৃতি চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রচলন করতে যাচ্ছে মান্না ফাউন্ডেশন। প্রতিবছর তিনজন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান শেলী।
মান্নার প্রকৃত নাম এস এম আসলাম তালুকদার। ১৯৬৪ সালের পয়লা বৈশাখ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্মেছিলেন তিনি। ১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যুক্ত হন জনপ্রিয় এই অভিনেতা।
‘দাঙ্গা’, ‘লুটতরাজ’, ‘তেজী’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’, ‘পিতামাতার আমানত’ প্রভৃতি মান্না অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। দুইশর বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি প্রযোজনা করেছেন কয়েকটি ছবি। ২০০৬ সালে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
নব্বই দশকে অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণের ধারা শুরু হলে যে কজন প্রথমেই এর প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে নায়ক মান্না ছিলেন অন্যতম। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন অভিনেতা মান্না। তাঁর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে আয়োজন করা হচ্ছে এ উৎসব। মান্না ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আগামী ৬ মার্চ ঢাকার মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে এই উৎসব হবে।