‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ বিতর্ক
আমি পুরো বিষয়টা অফিশিয়ালি দেখব : শিমলা
২০১৪ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়েছিল রুবেল আনুশ পরিচালিত ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ চলচ্চিত্রের কাজ। এরপর বিভিন্ন সময়ে বারবার আটকে গেছে ‘আলোচিত’ এই ছবির কাজ। পরিচালকের অভিযোগ, ছবির কাজে সব সময়ই অসহযোগিতা করেছেন নায়িকা শিমলা। এই মর্মে এরই মধ্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন পরিচালক আনুশ। এদিকে পুরো বিষয়টি শিমলা ‘অফিশিয়ালি’ মোকাবিলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগে পরিচালক আনুশ লিখেন, ‘আমি চলচ্চিত্রটি ২০১৪ সালে অক্টোবরে শুটিং শুরু করি। ছবিটির চিত্রনায়িকা শিমলাকে শর্তসাপেক্ষে চুক্তিবদ্ধ করি। চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় টাইম-শিডিউল নিয়ে তিনি টালবাহানা করেছেন। ছবিটি ছয় মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ দুই বছরেও শুটিং শেষ করা সম্ভব হয়নি। যার মূল কারণ ছিল নায়িকা শিমলা, দীর্ঘ সময়ের পর আজ শুটিং করার কথা ছিল। সে শুটিংয়ে উপস্থিত না থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।’
আনুশ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত মঙ্গলবার আমি একটি গান না করেই ছবিটি মুক্তির বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছিলাম। কারণ, সেদিন তিনি আমাদের পুরো ইউনিটকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন। এরই মধ্যে কয়েকজন সিনিয়র মিলে আমাদের মাঝে একটা সমঝোতা করে দেন। আজ আবারও শুটিংয়ের জন্য আয়োজন করি। সেদিনের মতো আজও অভিনেতা শিমুল খান, শিল্পী মামুন বসে আছেন কিন্তু শিমলা আসছেন না। আমরা গাড়ি ভাড়া করে ওনাকে আনতে পাঠিয়েছিলাম, তাঁরও মোবাইলফোন বন্ধ। পরে জানতে পেরেছি ম্যডাম আমার ড্রাইভারের মোবাইলপোন নিজের হাতে নিয়ে বন্ধ করে রেখেছেন। কয়েকজন প্রযোজককে নিয়ে আমরা আজ বাংলাদেশ প্রযোজক সমিতিতে বসি, সেখানে শিমলা আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন। শেষে আমি সিনিয়র প্রযোজকদের কাছে জানিয়ে দেই যে আমি ওনাকে ছাড়াই ছবিটি মুক্তি দিতে চাই। শিল্পী সমিতিতে আমি লিখিতভাবে বিচার চেয়েছি। এখন দেখি তারা কী করে।’
এ বিষয়ে অভিনেতা শিমুল খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি সিনিয়র শিল্পী হিসেবে শিমলা ম্যাডামকে সম্মান করি। গত মঙ্গলবার ওনার সাথে আমার কয়েকটি দৃশ্যে কাজ করার কথা ছিল। আমি সকাল ৮টা থেকে মেকাপ নিয়ে সেটে অপেক্ষা করছি, কিন্তু তিনি আসছেন না। বিকেল সাড়ে ৫টায় তিনি সেটে আসলেন, ততক্ষণে আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। একদিন গ্যাপ রেখে আজ আবার উনার সাথে আমার শুটিংয়ে জন্য ডাকা হলো। আমি আজও সকাল থেকেই শুটিংয়ে, কিন্তু উনি তো আর আসছেন না। এফডিসিতে এসে বিষয়টি নিয়ে পরিচালক অভিযোগ করলেন, আমি সাথে বসে ছিলাম। প্রযোজক সমিতিতে সিনিয়রা মীমাংসার চেষ্টা করলেন, তখনো শিমলা পরিচালকের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন দেখে আমি বাইরে চলে আসি।’
‘ঘেটুপুত্র কমলা’খ্যাত মামুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এই ছবিটি নিয়ে বিরক্ত লাগছে। আমার সামনে ২১ তারিখ পরীক্ষা। এর পরও এই ছবির শুটিং করতে আসলাম, কারণ গত দুই বছর ধরেই ছবিটি আটকে আছে। বন্ধু বা আশপাশের লোকজন হাসাহাসি করে। নিজের লজ্জা লাগে। গত মঙ্গলবার শিমলা আপু আমাদের বসিয়ে রেখেছেন, আজও একই অবস্থা। উনি অনেক বড় মাপের শিল্পী, অনেক সিনিয়র। কিন্তু আমি একটা কথা বলতে চাই। আমরা এখন যারা চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী, তারা আপনাদের মতো সিনিয়রদের সাথে কাজ করি, কাজ শিখি। আপনাদের আচরণও শিখি। এই ছবি করে গত দুই বছর একজন সিনিয়র শিল্পীর কাছে যা শিখলাম তা যদি মেনে কাজ করি, তাহলে চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করতে হবে না। এমনিতেই শেষ হয়ে যাবে।’
এ বিষয়ে শিমলাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছেন, এটি নিয়ে তিনি কোনো রকমের মন্তব্য করতে চান না। ‘আমি পুরো বিষয়টা অফিশিয়ালি দেখব’, এই কথা বলেই চলে যান শিমলা।
‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’ চলচ্চিত্রে দেখা যাবে ৩০ বছর বয়সের শিমলার সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন ১৮ বছরের তরুণ মামুন। ছবির কাহিনী লিখেছেন পরিচালক নিজেই। আশা তিশা প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, পুলক, বাপ্পী, লাবণী, সাদিয়া, আলিফ, মুসা, টুটুল চৌধুরী, আফরিন প্রমুখ।