জরায়ু ছোট, ডিম্বাণু বড়, সন্তানধারণে কী করণীয়
অনেক নারীই ওভারিয়ান সিস্ট সমস্যায় ভুগছেন। আবার অনেকে নানান চর্মরোগে ভুগছেন। আজ আমরা দুজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে এসবের উপসর্গ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
এনটিভির সরাসরি স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান ডাক্তার আছেন আপনার পাশে-র একটি পর্বে ওভারিয়ান সিস্ট নিয়ে কথা বলেছেন পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জয়শ্রী সাহা এবং চর্মরোগ নিয়ে কথা বলেছেন ল্যাবএইড হসপিটালের ডার্মাটোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. ইশরাত জাহান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. সামিউল আওয়ার স্বাক্ষর।
ওভারিয়ান সিস্ট বা টিউমার হলে কীভাবে বুঝবেন রোগীরা, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জয়শ্রী সাহা বলেন, ওভারিতে বিভিন্ন ধরনের সিস্ট আমরা দেখতে পাই। কী ধরনের সিস্ট, তার ওপরে উপসর্গগুলো ভ্যারি করে বা ভিন্নতা হয়। যেমন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হলে মেয়েদের মাসিকে অনিয়ম হয়। দেখা যায় যে দেরি করে মাসিক হচ্ছে, যেটা প্রতি মাসে হওয়ার কথা সেটা দেড় মাস, দুমাস বা তার বেশি সময় পরে হতে পারে। তার সঙ্গে হুট করে ওজন বেড়ে যাওয়া, তার সঙ্গে অবাঞ্ছিত কিছু জায়গায় লোম তৈরি হওয়া; অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা বলে যে ঘাড়ের পেছনে অথবা গলায় কালো দাগ পড়ে। আবার রিপ্রোডাকটিভ এজে অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা চলে আসে, বলে—অনেক দিন ধরে প্রেগন্যান্সির জন্য চেষ্টা করছে, কিন্তু হচ্ছে না। মানে বন্ধ্যত্ব। এটিও কিন্তু এই রোগের একটি উপসর্গ হতে পারে।
আমার ১২ বছরের একটা ছেলে বাচ্চা আছে। এখন আমি কনসিভ করতে চাচ্ছি। হচ্ছে না। দেড় বছর আগে একটা টেস্ট করিয়েছিলাম। ডাক্তার বলেছিলেন, আমার জরায়ু ছোট। কিছুদিন আগে এক ডাক্তার দেখিয়েছি, উনি বলছেন আমার ডিম্বাণু বড়। কনসিভ হচ্ছে না, আমার কী করণীয়? দর্শকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জয়শ্রী সাহা বলেন, যে সমস্যাটা হচ্ছে, ওটাকে আমরা বলি সেকেন্ডারি সাব-ফার্টিলিটি। অর্থাৎ একটা বেবি আছে, ১২ বছর বয়স হয়ে গেছে, এখন আপনি প্রায় দেড় বছর ধরে ট্রাই করছেন, হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আমার যেটা জানা জরুরি, সেটা হলো আপনার মাসিক নিয়মিত হয় কি না। আর আমরা একটা টিউবাল অ্যাসেসমেন্ট করি, অর্থাৎ বাচ্চার নালী যেটা আমরা বলি, ফ্যালোপিয়ান টিউব, এটি খোলা আছে কি না; এটা একটু দেখে নিতে হয়।
ডা. জয়শ্রী সাহা যুক্ত করেন, বিভিন্ন কারণে ইনফেকশন হয়ে অনেক সময় দেখা যায়—জরায়ুর দুই পাশে দুটি টিউব থাকে, এগুলো বন্ধ হয়ে গেলে কনসিভ হতে চায় না। আপনি এই টেস্ট করে দেখতে পারেন। যদি আপনার টিউব খোলা থাকে বা আপনার হাজব্যান্ডের সিমেন টেস্টও করে দেখতে বলব। সেটিও যদি ভালো থাকে, যেহেতু আপনার বয়স হয়ে যাচ্ছে, আপনার বড় বাচ্চার বয়স ১২ বছর, আমরা কিন্তু আপনাকে কনসিভ করার জন্য ওভুলেশন ইনডাকশন ড্রাগসও আপনাকে দিতে পারি। এ ক্ষেত্রে কিছু হরমোন টেস্ট করে দেখা, টিউবটা ঠিক আছে কি না দেখে নেওয়া এবং তার সঙ্গে আপনার হাজব্যান্ডের সিমেন পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া—ট্রিটমেন্ট শুরু করার আগে এটা করা জরুরি।
ওভারিয়ান সিস্ট, বন্ধ্যত্ব ও চুলকানির উপসর্গ এবং এসবের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওতে ক্লিক করুন।