পাইলসের অপারেশন কতটা জরুরি
অনেকে পাইলস, ফিস্টুলা, অ্যানাল ফিশারসহ পায়ুপথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগছেন। জীবন যাপন, খাদ্যাভ্যাসহ নানাবিধ কারণে আমরা পায়ুপথের সমস্যার সম্মুখীন হয়। এটি বেশ যন্ত্রণাদায়ক। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, পাইলসের অপারেশন না করলে পরবর্তী সময়ে কী কী সমস্যা দেখা দেয়।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে পায়ুপথে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন মুগদা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জুনায়েদুর রহমান লিখন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
অনেকে যেটি বলে থাকেন, তাঁরা পাইলসের ক্ষেত্রে অপারেশনে যেতে রাজি হন না। যাঁরা রাজি হচ্ছেন না, পরবর্তী সময়ে তাঁরা কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জুনায়েদুর রহমান লিখন বলেন, আমি তো বললাম, চারটা ডিগ্রি আছে। দেখা যাচ্ছে যে সে ট্রিটমেন্ট করাচ্ছে না, সেকেন্ড ডিগ্রি থার্ড ডিগ্রি হয়ে গেল, থার্ড ডিগ্রি ফোর ডিগ্রি হয়ে গেল। এর মানে তার জটিলতা বাড়ছে আরও। ডিজিজ প্রসেসটা আরও বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে তো তার জটিলতা অবশ্যই হবে। আমরা এখন পাইলসের ট্রিটমেন্ট মিনিমাম ওয়েতেই করছি, যেমন লঙ্গো অপারেশন, লেজারের মাধ্যমে অপারেশন। সে ক্ষেত্রে কাটাছেঁড়া অনেক কম হচ্ছে, রোগীর ডিজকমফোর্ট অনেক কম হয়। রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারে।
আমি যদি আপনার কাছে জানতে পারি, সেটি হচ্ছে অ্যানাল ফিশারের কথা আপনি বলছিলেন, সেটির কী কী ট্রিটমেন্ট রয়েছে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জুনায়েদুর রহমান লিখন বলেন, অ্যানাল ফিশার প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়ে আসলে আমরা মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট দিয়ে তাকে ট্রিটমেন্ট করতে পারি। আবারও কথা একটাই, কোষ্ঠকাঠিন্য রাখা যাবে না। খাদ্যাভ্যাস মেইনটেইন করতে হবে। যেখানে মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট ফেইলিউর অথবা তার পরিমাণটা অনেক বেশি, যেটা আমরা ধরে নিই যে মেডিকেল ম্যানেজমেন্টে ভালো হবে না, সেটার জন্য অপারেশন করতে হবে। এটাও আমরা ওপেন টেকনিক বা লেজারের মাধ্যমে অপারেশন করতে পারি।
আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখি যে অ্যানাল ফিশারের যে রোগী রয়েছেন, তাঁরা ডাক্তারের কাছে যান না। কারণ, এটি অনেক সময় দেখা যায় একেবারে ঠিক হয়ে গেছে, আগের অবস্থায় চলে এসেছে। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়, তাঁরা কি বাসায় দেখবেন ঠিক হচ্ছে কি না, না যখন হবে ডাক্তারের কাছে চলে যাবেন, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জুনায়েদুর রহমান লিখন বলেন, অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন, ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেবেন মেডিকেল ম্যানেজমেন্টে যাবেন, না কি সার্জারিতে যাবেন। যদি মেডিকেল ম্যানেজমেন্টে ভালো হয়ে যায়, তাহলে তার অপারেশনের দরকার নেই।
খাদ্যাভ্যাসে কোনও পরিবর্তন আনতে হবে কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জুনায়েদুর রহমান লিখন বলেন, আমি বারবারই বলছি, খাদ্যাভ্যাস পায়ুপথের সমস্যার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। প্রথম ইস্যু। অবশ্যই তাকে রেড মিট, মাংসজাতীয় খাবার কম খেতে হবে। ফলমূল, সবজি, মাছ বেশি খেতে হবে। পানি বেশি খেতে হবে। ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড খাওয়া যাবে না। এই অভ্যাসগুলো অবশ্যই মেইনটেইন করতে হবে। আমি সব সময় বলি যে পায়ুপথের সমস্যার জন্য প্রথম ট্রিটমেন্ট হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। অবশ্যই তার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হবে। এরপর মেডিকেল ট্রিটমেন্ট বা সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট। আরেকটি কথা, আপনি ট্রিটমেন্ট করলেন, অপারেশন করলেন, কিন্তু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলেন না, তাহলে আপনি কিন্তু আবার বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন।
পায়ুপথের বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকার সম্পর্কে আরও জানতে উপরের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।