রমজানে হৃদরোগীদের খাবার ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা
সিয়াম সাধনার এ মাসে ক্রনিক রোগীদের বাড়তি যত্ন নিতে হয়। মেনে চলতে হয় বিশেষ কিছু পরামর্শ। আর তা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে নিতে হবে। অনেকে হৃদরোগে ভুগছেন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, রমজানে হৃদরোগীদের খাদ্যাভ্যাস কেমন হবে।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে রমজান ও হৃদরোগ বিষয়ে কথা বলেছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হসপিটালে কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. শেখর কুমার মণ্ডল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
রমজানে খাদ্যাভ্যাসে আমাদের বিশাল রকমের পরিবর্তন হয়ে থাকে। কী কী খাবার হৃদরোগীর খাওয়া বাদ দেওয়া উচিত বা পরিবর্তন করা উচিত বলে আপনি মনে করেন, যেন তারা পরবর্তী সময়ে সুস্থ থাকে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. শেখর কুমার মণ্ডল বলেন, খাবারের ব্যাপারে আমাদের পরামর্শ থাকে, বিশেষ করে ইফতারের সময়, আমাদের দেশে ইফতারের সময় ভাজাপোড়া খাবারকে প্রাধান্য দিই। তো হৃদরোগী যাঁরা আছেন, তাঁরা ভাজা খাবার কম খাবেন। সারা দিন যেহেতু কোনও কিছু খায় না, পানিও খায় না, সুতরাং তাঁর ডিহাইড্রেশন হয়ে যায়। ইফতারের সময় ডিহাইড্রেশনটাকে হাইড্রেটেড করার জন্য তাঁকে অবশ্যই শরবতজাতীয় খাবার খেতে হবে। যদি হৃদরোগের সাথে ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে চিনিজাতীয় খাবার অ্যাভয়েড করে লেবুর শরবত খেতে পারেন, ডাবের পানি খেতে পারেন। ফলমূল আমরা খেতে পারি, সবুজ শাকসবজি খেতে পারেন। খেজুর খেতে পারেন এবং আঁশযুক্ত খাবার খেতে বলি, বাদাম খেতে বলি। আমরা বলি যে ধরনের খাবারে হৃদরোগের ঝুঁকি কম, সে ধরনের খাবার আপনি ইফতারে বেশি করে খাবেন।
হৃদরোগী যাঁরা রয়েছেন, যাঁরা রোজা রাখছেন এবং খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না, তার পরেও যেন পরবর্তী সময়ে তাঁর কোনও অসুবিধা না হয় বা সম্মুখীন হতে না হয়, সে জন্য রমজানের মাঝখানে কোনও ধরনের টেস্ট করার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. শেখর কুমার মণ্ডল বলেন, দেখুন, কিছু কিছু অসুখ আছে, সেগুলোকে আমরা সব সময় অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করি। যেমন একজন রোগীর সাডেন বুকে পেইন হচ্ছে, একজন রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেল, একজন রোগীর অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, একজন রোগী হার্ট বিট অনিয়ন্ত্রিত, সেসব রোগীর ক্ষেত্রে আমরা সতর্কতা অবলম্বন করতে বলি এবং তাঁদের রেগুলার চেকআপের ভেতর থাকতে হবে। রেগুলার চেকআপ কী। হার্টের জন্য আমরা ইসিজি ও ইকো করতে বলি। এগুলো করে দেখা যায় হার্টের ফাংশন কেমন আছে। পাশাপাশি অন্যান্য রিস্ক ফ্যাক্টর অ্যাসেসমেন্টের জন্য রেনাল ফাংশন টেস্ট, লিভার ফাংশন টেস্ট করি। কোলেস্টেরল আমরা দেখতে পারি।
ডা. শেখর কুমার মণ্ডল বলেন, অনেক সময় দেখা যায় ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকে। ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট করে দেখতে পারি। মানে তাঁর হোল একটা টেস্ট করতে হবে যে তাঁর আসলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আছে কি না। ব্লাড গ্লুকোজ সে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে কি না। এটা দেখাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা একটা চ্যালেঞ্জ।
রমজান ও হৃদরোগ সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।