নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় কী করবেন?

বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া। নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রধান ওষুধ। এর পাশাপাশি আরো ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮০২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ সুলতান উদ্দীন।
প্রশ্ন : এরপর আপনারা কী করেন?
উত্তর : সব ক্ষেত্রে হয়তো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য অপেক্ষা করা সম্ভব হয় না। পরীক্ষা-নিরীক্ষারলা ফল আসার আগেই চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে। কারণ, বাচ্চাদের যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এটি কম হওয়ার কারণে যেকোনো সময় নিউমোনিয়া থেকে অন্য কোনো ধরনের জটিলতা, যেমন হার্ট ফেইলিউর হতে পারে।
চিকিৎসক কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরামর্শ দেবেন। তবে সেই প্রতিবেদন হাতে আসার আগেই, লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে, দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
নিউমোনিয়ার চিকিৎসার প্রধান বিষয় হলো অ্যান্টিবায়োটিক। এটি বাচ্চাকে মুখে খাওয়ার জন্যও দেওয়া যেতে পারে, যদি নিউমোনিয়া সাধারণ পর্যায়ে হয়।
আর নিউমোনিয়াকে আমরা দুভাগে ভাগ করতে পারি। একটি মারাত্মক পর্যায়, আরেকটি হলো সাধারণ পর্যায়। যদি মারাত্মক পর্যায়ের হয়, তাহলে বাচ্চাকে মুখে ওষুধ দিলে বাচ্চা হয়তো খেতে পারবে না বা বাচ্চা মুখে খেলেও পেটে রাখতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে আমরা বাচ্চাদের হাসপাতালে ভর্তি করে ইনজেকশন, অ্যান্টিবায়োটিক, অক্সিজেন, এসব চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।
প্রশ্ন : সাধারণত নিউমোনিয়ার চিকিৎসা কত দিন ধরে চলতে থাকে?
উত্তর : সাধারণ নিউমোনিয়া হলে অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণত এক সপ্তাহ ধরে দিতে হয়। নিউমোনিয়া আক্রান্ত বাচ্চার সাধারণত জ্বর থাকে। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি কাশি থাকে, সে জন্য জ্বরের নিরাময় হিসেবে প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। কাশি ও শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য তুলসী পাতার রস, একটু মধু এগুলো খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। তাহলে নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর কাশি, শ্বাসকষ্ট দ্রুত কমে যাবে।
প্রশ্ন : সাধারণ নিউমোনিয়ার চিকিৎসা না করা হলে সেটি মারাত্মক পর্যায়ে যাবে?
উত্তর : হ্যাঁ। অনেক ক্ষেত্রে সব রোগজীবাণুর রোগ তৈরি করার ক্ষমতাও সমান হয় না। যেমন স্টেফার কক্কাস ওরিয়াস একটি জীবাণু আছে, যেগুলো বাচ্চাদের আক্রান্ত করলেই নিউমোনিয়া খুব মারাত্মক পর্যায়ে পড়ে যায়। এটি একটি কারণ থাকে। আর বাচ্চার পুষ্টির অবস্থার ওপরও নিউমোনিয়া নির্ভর করে। একটি বাচ্চার পুষ্টি যদি ভালো থাকে, তাহলে নিউমোনিয়া হলেও মারাত্মক পর্যায়ে যায় না। আর একটি বাচ্চা যদি অপুষ্টিতে ভোগে, তাহলে সাধারণ রোগজীবাণুতে আক্রান্ত হলেও কিন্তু বাচ্চার নিউমোনিয়া মারাত্মক পর্যায়ে যেতে পারে।