নবজাতকের যত্নের চার বিষয়

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাকে নিয়ে শুরু হয় নতুন চিন্তাভাবনা, শুরু হয় নতুন চ্যালেঞ্জ। শিশু জন্মের পর তার যত্নের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। এমনই চারটি বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা।
১. জন্মের পর পরই দ্রুত পরিচর্যা
জন্মের পর পরই শিশুর নাক ও মুখের মধ্যে জমে থাকা মিউকোনিয়াম নামক পিচ্ছিল তরল সাকশন ( মেশিনের সাহায্যে শুষে) বের করে দিতে হবে। এতে শিশুর শ্বাস প্রশ্বাসে সুবিধা হবে। শিশুকে পরিষ্কার জীবাণু মুক্ত সুতি গরম কাপড় দিয়ে জড়িয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার রুমে রাখতে হবে।
হাসপাতালে শিশু জন্ম নিলে শিশু চিকিৎসক শিশুর কোনো ত্রুটি আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখেন।
জন্মের পর শিশুর দেহে মিউকোনিয়ামের যে আবরণ লেগে থাকে তা দূর করার জন্য ‘লিকুইড প্যারাফিন’ নরম কাপড় বা তুলোয় লাগিয়ে আলতোভাবে পুরো শরীর মুছে দিতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানিতে শিশুকে গোসল করাতে হবে।
২. নাভির যত্ন
নাভি সুতা বা ক্লিপ দিয়ে বেঁধে দেওয়ার পরও সেখান থেকে রক্তপাত হলে চিকিৎসককে জানাতে হবে। প্রতিদিন নাভির গোড়া রেকটিফায়েড স্পিরিটে ভেজানো তুলা দিয়ে মুছে দেওয়া যেতে পারে। তবে এটি না করলেও ক্ষতি নেই। তবে নাভি শুকানোর আগ পর্যন্ত নাভিতে পানি না লাগানোই ভালো। সপ্তাহে দুয়েকের মধ্যেই নাভি খসে পড়ে যাবে। তবে এর মধ্যে নাভিতে কোনো পুঁজ জমলে বা দুর্গন্ধ হলে শিশুরোগ বিশষেজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
৩. কাপড় চোপড়
নবজাতক শিশুর কাপড় চোপড় অবশ্যই কোমল ও সুতি হওয়া উচিত। পোশাক ঢিলেঢালা এবং শরীরের নিচের অংশের পরিধেয় বস্ত্র সেলাইবিহীন হলে ভালো। শিশুর কাপড় চোপড় সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নেওয়ার পর ইস্ত্রি করে নেওয়া ভালো। তবে কাপড় ধোয়ার জন্য পানিতে স্যাভলন জাতীয় উপাদান ব্যবহার না করাই ভালো। এতে শিশুর ত্বকে র্যাশ উঠতে পারে।
৪. ঘুম আর ঘুম
নবজাতক শিশু দিনে প্রায় ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটায়। শিশুকে সব সময় কাত করে এবং এপাশাপ-ওপাশ করে শোয়াতে চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে খাওয়ানোর পর এটা অবশ্যই করানো উচিত। এভাবে শোয়ালে শিশু যদি বমি করে তা সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে। চিৎ করে শোয়ানো অবস্থায় বমি করলে তা শ্বাসনালিতে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে খাওয়ার ঘণ্টা খানেক পর চিৎ করে শোয়ালে কোনো ক্ষতি নেই।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ