শিশুর নাকের রক্তক্ষরণ : কী করবেন?

শিশুর নাক দিয়ে রক্ত পড়লে আতঙ্কিত না হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন। ছবি : সংগৃহীত
নাক দিয়ে রক্ত পড়া এমন একটি সমস্যা, যা খুব সাধারণ বিষয় থেকে শুরু করে মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত বহন করে। শিশুর নাক দিয়ে রক্ত পড়লে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।
- দ্রুত ব্যবস্থা : নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বসে কিছুটা উপুড় হয়ে তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে নাক দুপাশ দিয়ে টানা ১০ মিনিট চেপে ধরতে হবে। এভাবে ধরে থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। নাক এভাবে চেপে ধরার পর রোগীকে চিৎ করে শুইয়ে দিতে হবে।
- পূর্ণ বিশ্রাম : নাক দিয়ে রক্তক্ষরণের সব ধরনের রোগীকেই পূর্ণ বিশ্রামে রাখা প্রয়োজন। এই বিশ্রাম মানে হচ্ছে রোগীকে সব সময় বিছানায় শুইয়ে রাখতে হবে। শুধু বাথরুমের কাজ ছাড়া বিছানা থেকে ওঠা যাবে না। এমনকি ওঠার সময় রোগীকে সাহায্য করতে হবে যেন নিজে কষ্ট করে উঠতে না হয়।
- হাসপাতালে ভর্তি করা : নাক দিয়ে রক্ত পড়া রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়াই উত্তম। হাসপাতালে ভর্তি করলে বারবার রক্তক্ষরণের আতঙ্কে পড়তে হবে না। সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
- নাকের মধ্যে প্যাক দেওয়া : নাক দিয়ে বেশি রক্ত পড়লে নাকের ভেতর গজ দিয়ে প্যাক দিতে হয়। নাকের প্যাক সাধারণত দুই ধরনের হয়। এক ধরনের প্যাক নাকের সামনের দিক দিয়ে দেওয়া হয়। এই প্যাক সর্বোচ্চ ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত রাখা যায়। আরেক ধরনের প্যাক মুখের ভেতর দিয়ে নাকের পেছনের দিকে দেওয়া হয়। নাকের পেছন দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে এ ধরনের প্যাক দেওয়ার দরকার পড়ে।
- কারণ খুঁজে চিকিৎসা : কিছু ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণের কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া না। আর পাওয়া গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রক্তক্ষরণের কারণ খুঁজে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেসব ক্ষেত্রে কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না, সেসব ক্ষেত্রে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়।
- রক্ত পরিসঞ্চালন : চিকিৎসার অংশ হিসেবে বেশি রক্তক্ষরণ হলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অনুযায়ী রক্ত পরিসঞ্চালনের দরকার হতে পারে। অনেক সময় রক্তের প্লাটিলেট কিংবা রক্ত জমাট বাঁধার উপাদানগুলোও পরিসঞ্চালনের দরকার পড়ে।
- নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে কোনোক্রমেই আতঙ্কিত হওয়া চলবে না। আতঙ্কিত হয়ে কোনো লাভ নেই; বরং সচেতনতা সাহসের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলেই অবস্থা সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে আতঙ্ক কাটাতে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি রাখা উচিত।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।