ব্রণ প্রতিরোধের সঠিক উপায় কী?
ব্রণ এমন একটি সমস্যা, যেটি মানুষের কোনো না কোনোভাবে অন্তত একবার হয়ে থাকে। এটি নিয়ে অনেকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। কেবল তাই নয়, অতিরিক্ত ব্রণ ত্বকে প্রদাহ তৈরি করে। তাই ব্রণ প্রতিরোধ জরুরি।
ব্রণ প্রতিরোধের সঠিক উপায় জানিয়ে এনটিভি অনলাইনকে পরামর্শ দিয়েছেন ডা. রেজা বিন জায়েদ। তিনি বর্তমানে স্কিন স্কয়ার চর্মরোগ বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রেজা বিন জায়েদ বলেন, ব্রণ হলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে, বিষয়টি এমন নয়। এটি আসলে অন্য রোগের মতো নয়। এটি সৌন্দর্য ও মনোস্তত্ত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। ব্রণ সবচেয়ে বেশি যেহেতু বয়ঃসন্ধিকালে হয়, ‘আমি বলব, কিছু জিনিস মানলে ব্রণ অনেকটাই উপশম করা সম্ভব। এক নম্বর হলো, যত্রতত্র কসমেটিক ব্যবহার না করা। কসমেটিকসের ব্যবহার সাধারণত শুরু হয় বয়ঃসন্ধিতে। খুব বেশি কসমেটিকস ব্যবহার না করে খুব সহজভাবে থাকলেই ভালো।’
গরম ও বর্ষার সময় মুখ অনেকটাই তেলতেলে হয়ে যায়। এই তেলতেলে ভাবটি সরানোর জন্য বারবার পানি দিয়ে মুখ ধুতে হবে। সাবান দিয়ে ধুতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে আরেকটি কথা বলি, অবশ্যই ফেসওয়াশ ব্যবহার নয়। ইদানীং মানুষ ফেসওয়াশ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। ফেসওয়াশ কিন্তু অয়েল বেজ। অয়েল বেজ যেকোনো জিনিস মুখে আটকে থাকে। তেলেতেলে ভাব বাড়িয়ে দেয়। ব্রণের প্রধান কারণ হলো, মুখ তেলতেলে থাকা। আমার অভিজ্ঞতা মতে, ব্রণের কারণের ভেতরে ফেসওয়াশ একটি কারণ। এ ছাড়া আরো বিষয় রয়েছে। যেমন, সূর্যের আলো যতটুকু এড়িয়ে যাওয়া যায়, তত ভালো। আলট্রাভায়োলেট লাইট ব্রণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হলো ছাতা ব্যবহার করা। মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘোমটা দেওয়া। ছেলেদের ক্ষেত্রে ক্যাপ পরা যেতে পারে। যাদের ব্রণের প্রবণতা, তারা এগুলো করলে উপকার পাবে।’
‘আরেকটি বিষয় হলো, সানস্ক্রিনের ব্যবহার বেড়ে গেছে ইদানীং। মানুষ মনে করে, সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা সানস্ক্রিন দিয়ে হয়। সত্যিই হয়। তবে সানস্ক্রিন ব্রণের জন্য খারাপ জানিয়ে এ চিকিৎসক বলেন, এটি ব্রণকে উল্টো বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ, সানস্ক্রিন নিজের ব্রণের রন্ধ্রগুলোকে বন্ধ করে দেয়। ব্রণ আরো বড় হয়ে যায়, সংখ্যায় বাড়ে। আর ব্যবহার করতে হলে অয়েল ফ্রি সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারে।’
‘উপদেশের ক্ষেত্রে বলব যে একটু পানি দিয়ে তেলতেলে ভাব সরাতে হবে। সাধারণ সাবান, যেকোনো বার সাবান ব্যবহার করলেই হবে। কসমেটিকস কম ব্যবহার করাই ভালো। আজকাল এত বেশি ফাউন্ডেশন বেজ কসমেটিকস, এগুলো উপকারের জায়গায় উল্টো অপকার করে। আর শেষে বলব, ব্রণের সমস্যা সমাধানের জন্য চোখ-ধাঁধানো ওষুধ বা কসমেটিকস পাওয়া যায়, এগুলো বিবেচনা না করাই ভালো। আমরা যেভাবে ব্রণের চিকিৎসা করি, এগুলোর তার সঙ্গে মেলে না। যে কারো কাছে জিজ্ঞেস করে ব্রণের জন্য একটি কসমেটিকস নিয়ে নেওয়া ভালো হবে না।’
চর্ম বিশেষজ্ঞ ডা. রেজা বিন জায়েদ বলেন, ‘ব্রণের সমস্যা সমাধানে অনেক ঘরোয়া উপায় রয়েছে। এসব ঘরোয়া উপায়ে আমি এ পর্যন্ত তেমন অপকার পাইনি। তবে আলাদা কিছু ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করার চেষ্টা করে অনেকে। এতে কিন্তু ত্বক পুড়ে যায়। এর ভেতরে মধুর সঙ্গে চুন একটি। এর মধ্যে আমি আরেকটি পেয়েছি, লেবুর রসের সঙ্গে আরেকটি কেমিক্যাল মিলিয়ে মিশ্রণ তৈরি করা। আরেকটি আমি পেয়েছি রসুন। এগুলোতে আমি দেখতে পাই ব্রণের চিকিৎসা করতে গিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়ে যায়।’
শেষে আমি বলব, ব্রণ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ, একটি সময় ব্রণ নিজে থেকে ভালো হয়। সহজভাবে চললে ভালো, সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেই ভালো বলে পরামর্শ তার।