বিশ্ব মস্তিষ্ক টিউমার দিবস
মস্তিষ্কের টিউমারের লক্ষণ কী

ব্রেন (মস্তিষ্ক) টিউমারের কথা শুনলেই মনটা আঁতকে ওঠে। ভয়াবহ কিছু মনে ভেসে ওঠে। কারণও আছে। মস্তিষ্ক খুব বিশেষ একটা জায়গা। এখানে অস্ত্রোপচার বেশ কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। আমাদের দেশে একসময় ব্রেনের অস্ত্রোপচার হতো না বললেই চলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাও এগিয়েছে অনেকখানি। এখন আমাদের দেশেই আধুনিক মানের মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার হচ্ছে।
মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা কম নয়। প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হয়। ব্রেন টিউমার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রতিবছর ৮ জুন পালন করা হয় 'বিশ্ব ব্রেন টিউমার দিবস'। এ বছরও তা পালিত হচ্ছে।
ব্রেন টিউমার দুই ধরনের হতে পারে। প্রাইমারি বা যেটি মস্তিষ্কে হয় এবং সেকেন্ডারি বা যেটি শরীরের অন্য অংশ থেকে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে।
মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেহেতু মস্তিষ্ক চারদিকে শক্ত হাড় দিয়ে ঘেরা থাকে, তাই এতে কোনো টিউমার হলে তা মস্তিষ্কের চাপ বাড়ায়।
একে বলে ইন্ট্রাক্রানিয়াল প্রেসার বেড়ে যাওয়া। এর লক্ষণ হলো মাথাব্যথা। এটি সাধারণত ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়ে, হাঁচি-কাশি দিলে বা মলত্যাগের সময় বাড়ে। বমিও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। বমি বা বমি বমি ভাব অনেক দিন ধরেই চলতে থাকে। বমি বন্ধের ওষুধেও কমে না।
মস্তিষ্কের কোন অংশে টিউমার তার ওপর নির্ভর করে লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন : ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, শরীরের একপাশ অবশ, স্মৃতিভ্রম, চোখে দেখার সমস্যা, দূরে দেখার সমস্যা, খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি।
চিকিৎসক এমন লক্ষণের রোগীকে শারীরিক পরীক্ষা করে আরো নিশ্চিত হন।
রোগ নির্ণয় করার জন্য এমআরআই অব ব্রেন পরীক্ষা করলে রোগ ধরা পড়ে সহজেই। এ ছাড়া আরো কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।
ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে আছে সার্জারি, রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপি।
অনেকে মনে করেন, আমাদের দেশে মনে হয় ব্রেন টিউমারের সুচিকিৎসা নেই। এ ধারণা একেবারেই ভুল। আমাদের দেশে ব্রেন টিউমারের আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে আধুনিক চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায়। তবে এ সার্জারি বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। সব ধরনের টিউমারে যে অপারেশন লাগবে, তা ঠিক নয়। কিছু টিউমার ওষুধে সেরে যায়।
অনেকে রোগ নিয়ে বসে থাকেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে চান না। দেরি করলে বিপদ বাড়ে। তাই দেরি না করে চিকিৎসককে দেখান।
লেখক : মেডিকেল অফিসার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।