বড় হারে বিদায়ের পথে রাজশাহী
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দায়িত্ব নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত ও আনিসুল ইসলামরা। টপ অর্ডারদের ব্যর্থতার দিনে বেশি দূর যেতে পারেনি মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীও। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের কাছে ৩৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের পথে রাজশাহী।
তবে আশা একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি। দিনের আরেক ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে বরিশাল যদি বড় ব্যবধানে হারে যায় তাহলে ভাগ্য খুলতে পারে রাজশাহীর।
অন্যদিকে টুর্নামেন্টে টানা সপ্তম ম্যাচ তুলে নিল চট্টগ্রাম। সাত জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে শীর্ষস্থান ধরে রাখল মোহাম্মদ মিঠুনের দল।
১৭৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে রাজশাহী। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হারায় ওপেনার আনিসুল ইসলামকে। নাহিদুলের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন আনিসুল।
টিকতে পারেননি ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা নাজমুল হোসেন শান্ত। নাহিদুলের পরের ওভারেই ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন নাজমুল (১১)। সেখানে ছিলেন ফিল্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করেন তিনি। দলীয় ৩৩ রানের মাথায় রনি তালুকদারকেও আউট করেন নাহিদুল।
অল্প রানের মধ্যে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারানোর পর ফজলে মাহমুদ ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে রাজশাহী। আশা জাগানিয়া এই জুটি ভাঙেন রাকিবুল হাসান। ১৯ রানে মাহমুদকে এলবির ফাঁদে ফেলেন রাকিবুল।
এরপর নুরুলের সঙ্গে কিছুক্ষণ রাজশাহীকে টানেন মেহেদী হাসান। ২৬ রানে মেহেদীকে সাজঘরের পথ দেখান শরিফুল। দ্রুত উইকেট হারিয়ে আর লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব হয়নি রাজশাহীর। শেষ পর্যন্ত ১৩৯ রানেই থেমে যায় নাজমুলের দল।
এর আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৭৫ রান করেছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের ব্যাটে দারুণ সূচনা করে চট্টগ্রাম। এক ম্যাচ বিরতিতে দিয়ে রাজশাহীর বিপক্ষে ফিরেছেন লিটন। ফিরেই চেনা ছন্দে ছিলেন ডানহাতি এই ওপেনার। পুরো টুর্নামেন্টে ফর্মে থাকা লিটন এদিন ৩৮ বলে তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। তাঁর ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও একটি ছক্কার মার।
অন্যদিকে টুর্নামেন্টের শেষ দিকে এসে ফর্ম খুঁজে পেয়েছেন সৌম্য। রাজশাহীর বিপক্ষে তিনিও হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। হাফসেঞ্চুরির ঘরে যেতে ৪০ বল খেলেছেন বাঁহাতি ওপেনার। চট্টগ্রামের এই ওপেনিং জুটি ভাঙে ১৫তম ওভারে। আনিসুল ইসলামের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে আউট হন সৌম্য। ৬৩ রানে শেষ হয় তাঁর ইনিংস, ১২২ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি।
পরের ওভারে ফেরেন লিটন। রেজাউলের বলে স্কুপ করতে গেলে উল্টো বল লেগে যায় স্টাম্পে। ৪৩ বলে ৫৫ রান করে আউট হন ডানহাতি এই ওপেনার।
বরাবরের মতো এবারো ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি চট্টগ্রাম অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। দুই রানের মাথায় মিঠুনকে সাজঘরের পথ দেখান আনিসুল ইসলাম।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে টিকতে দেননি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে তিন রানে ফিরিয়ে দিয়েছেন সৈকতকে। এরপর শামসুর রহমানের ব্যাটে চড়ে নির্ধারিত ওভারে ১৭৫ রানে থামে চট্টগ্রাম। ইনিংস শেষে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন শামসুর রহমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ২০ ওভারে ১৭৫/৪ (সৌম্য ৬৩, লিটন ৫৫, মিঠুন ২, সৈকত ৩, শামছুর ৩০, জিয়াউর ১০; সাইফউদ্দিন ৪-০-৩২-১, মেহেদী ৩-০-২৭-০, রেজাউর ৪-০-৩৮-১, আনিসুল ৩-০-২০-২, মুকিদুল ৩-০-২৪-০, আরাফাত ১-০-১৩-০)।
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী : ২০ ওভারে ১৩৯/৮ (নাজমুল ১১, আনিসুল ৫, রনি ১৬, মাহমুদ ১৯, নুরুল ২৮, মেহেদী ২৬, সাইফউদ্দিন ৯, সানজামুল ১২, আরাফাত ৭, রেজাউর ২; শরিফুল ৪-০-২৮-০, নাহিদুল ৪-০-১৯-৩, রাকিবুল ৪-০-৩১-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২৩-১, সৈকত ২-০-১৯-০)।
ফল : ৩৬ রানে জয়ী গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।