জ্বর হলে তরল জাতীয় খাবার বেশি খান

শীতে সর্দি-জ্বরে অনেকেই ভোগেন। এ সময় বিশ্রাম নিতে হবে, পাশাপাশি বেশি করে খেতে হবে তরল জাতীয় খাবার। শীতে সাধারণ সর্দি- জ্বরে করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩২৯৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. মাতলেবুর রহমান।
ডা. মো. মাতলেবুর রহমান বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সাধারণ সর্দি –কাশিতে করণীয় কী? আর এই ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো প্রয়োজন রয়েছে কি?
উত্তর : আমাদের চেম্বারে অনেক রোগী আসেন। এসেই বলেন, ‘স্যার অ্যান্টিবায়োটিক দিন’। উনি হয়তো মনে করেন জ্বর যেহেতু উচ্চ মাত্রার, তাই অ্যান্টিবায়োটিক খেতেই হবে। তাহলে জ্বর কমে আসবে। পাশের ফার্মেসিতে গিয়ে উনি হয়তো একটি ওষুধ কিনে খেয়ে ফেললেন। আমরা যেটি বলতে চাই, সেটি হলো ঋতুবদলের সঙ্গে সঙ্গে কিছু ভাইরাসজনিত রোগ হয়। এই ক্ষেত্রে দেখা যায় ভাইরাল জ্বরে সর্দি কাশি হতে পারে। ভাইরাল জ্বরের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই পাঁচ থেকে সাতদিনের মধ্যে রোগীর উন্নতি হয়। জ্বরের তীব্রতাটা অনেক বেশি এখানে। অনেক সময় দেখা যায় ১০৫/ ১০৬ পর্যন্ত চলে যায়। সে ক্ষেত্রে অনেক সময় আমরা একটু দ্বন্দ্বে পড়ে যাই। আবার ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। এসব ক্ষেত্রে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলি।
এসব ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার একটি সমস্যা হলো পরে যদি আপনার কোনো জটিল অসুখ হয়, যদি ওই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন পড়ে, তাহলে হয়তো দেখা যায় অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করে না। ওই জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি সহনশীল হয়ে যায়। এ কারণে ওই অ্যান্টিবায়োটিক ওই জীবাণুকে আর মারতে পারে না।
আমরা রোগীর কালচার করে অনেক সময় দেখি অনেক অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিই তার শরীর সহনশীল। হয়তো সে সেটি খায়নি, তার পাশে হয়তো কেউ খেয়েছে, সামাজিক একটি সংযোগের কারণে হয়তো রেসিসটেন্স বৃদ্ধি পেয়ে যেতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসকে মারবে না। আমাদের একটি সমস্যা হলো, আমরা অল্পতেই ধৈর্য হারা হয়ে যাই। সবাই আমরা চিকিৎসক হই।
জ্বর হলে আমাদের যেটি পরামর্শ, সেটি হলো, কুসুম গরম পানি দিয়ে গা মুছে দেবেন। ওরস্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, তরল জাতীয় জিনিস বেশি বেশি করে খাওয়াবেন। সর্দির জন্য সর্দির ওষুধ খেতে পারেন। জ্বরের জন্য, মাথাব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক নয়। বিশেষজ্ঞ অথবা একজন রেজিস্ট্রার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ওষুধ খাওয়া উচিত।