শিশু ঠিকমতো খাচ্ছে, কীভাবে বুঝবে অভিভাবকরা?

শিশু ঠিকমতো খাচ্ছে কি না, এ নিয়ে অনেক অভিভাবকই চিন্তিত থাকে। অনেকের ধারণা শিশু স্থূল হলেই বোধহয় তার স্বাস্থ্য ভালো হয়। তবে বিষয়টি কি সঠিক? কীভাবে একজন অভিভাবক বুঝবে তার শিশুটি ঠিকমতো খাচ্ছে?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৩৩৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ছামিদুর রহমান। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শিশু বিভাগে ইউনিট প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : মা-বাবা কীভাবে বুঝবে শিশু পর্যাপ্ত খাচ্ছে?
উত্তর : এই ক্ষেত্রে যারা পারিবারিক চিকিৎসক বা আমরা যারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, তাদের একটি বড় দায়িত্ব রয়েছে। মানুষ শিক্ষিত হলেও স্বাস্থ্য সম্পর্কে তো সবাই শিক্ষিত না, হওয়া সম্ভবও নয়। ধরুন, একটি বাচ্চা জন্মের সময় প্রায় তিন কেজি ওজনের হলো। এক বছর পর তার ওজন হবে নয় কেজি। তাহলে যখন বাচ্চাটার বয়স চার মাস হবে, তখন তার ওজন পাঁচ কেজি, সাড়ে পাঁচ কেজি থাকলে যথেষ্ট। যখন সাত মাস বয়স হবে, তার ওজন সাড়ে ছয় থেকে সাত কেজি থাকলে যথেষ্ট। দশ থেকে বারো মাসের সময় নয় কেজি হলেও যথেষ্ট।
এখন সমস্যা যেটি হয় মায়েরা যেহেতু বাচ্চাদের প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়, তার বাচ্চার বয়স হয়তো চার মাস, ওজন হয়তো সাড়ে চার কেজি বা পাঁচ কেজি, তখনও মনে করছে বাচ্চা খায় না। আরেকটি সুন্দর বাচ্চা যখন সে অন্য মায়ের কোলে দেখে, এর সঙ্গে তুলনা করে।
আসলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ওজনের একটি বিষয় রয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য একটি পরামর্শ হলো, আপনি দেখবেন, আপনার বাচ্চাটি খেলাধুলা করে কি না, প্রাণবন্ত কি না। তার ভেতরে অশান্তি নেই, অস্বস্তি নেই, অসুখ নেই। আর দেখতে হবে বাচ্চাটা ঘন ঘন অসুস্থ হচ্ছে কি না। যদি ঘন ঘন অসুস্থ না হয়, তাহলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রয়েছে।
আরেকটি জিনিস দেখতে পারেন, বাচ্চার চুল যদি উজ্জ্বল থাকে, তাহলে বুঝবেন তার পুষ্টি ঠিক রয়েছে। ত্বক যদি উজ্জ্বল থাকে, তাহলে জানবেন যে অপুষ্টি নেই।
আরেকটি বিষয় বলতে চাই, একে অন্যভাবে নেবেন না। বস্তির বাচ্চারা কিন্তু সুজি খায়। এ ধরনের বাচ্চাদের কিন্তু মোটাসোটা মনে হয়। চুলটা দেখবেন উসখো খুশকো। এটি দেখে কিন্তু বোঝা যায় যে সে অপুষ্টিতে ভুগছে।
তাই স্বাস্থ্য এক জিনিস, আর পুষ্টি আরেকটি জিনিস। আমরা মনে করি, ওজন কেন বাড়ছে না, দেখতে কেন মোটা লাগছে না। সবাই এক রকম হবে তা নয়। মানুষের জিনগত গঠনটাও সেরকম নয়। একটু স্থূল হওয়া মানেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী নয়। বরং এটি অনেক সময় ক্ষতিরও কারণ। একটি জিনিস খেয়াল করতে হবে, তার ওজন সঠিক মাত্রায় রয়েছে কি না, স্বাভাবিক খাবার অল্প-সল্প খাচ্ছে কি না। সে খেলাধুলা করছে কি না এবং ঘন ঘন অসুস্থ হচ্ছে কি না।