কাদের হাড় ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি বেশি
অনেকেই হাড় ক্ষয় রোগে ভুগছেন। জীবন যাপন পদ্ধতি থেকে শুরু করে শরীরের প্রতি আমাদের অবহেলা থেকে এ রোগ বাড়ে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব হায় ক্ষয় রোগ কী এবং কারা এ রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে হাড়ের ক্ষয় রোগ ও এ থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে কথা বলেছেন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মহীউদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
অস্টিওপোরসিস বা হাড়ের ক্ষয় রোগ বলতে আসলে কী বোঝায়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মহীউদ্দীন বলেন, হাড়ের ক্ষয় রোগ এখন খুবই কমন ডিজিজ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের সারা ওয়ার্ল্ডেই। এমনিতেও হাড়ের ক্ষয় হবে। যখন বয়স হয়, চুল পেকে যায়, শরীর যেমন অন্যরকম হয়ে যায়, হাড়ও ওই রকম ভেতরে ভেতরে ক্ষয় হতে থাকে। তার পরেও আমাদের যাতে কম ক্ষয় হয়, সবাইকে একদিন মরে যেতে হবে, যাতে আমরা ভালোভাবে চলে যেতে পারি। চলাফেরা করতে পারি। সেটা আমাদের টার্গেট। আমাদের হাড়ের কিছু সেল আছে, কিছু মিনারেলস আছে এবং কিছু ম্যাট্রিক্স আছে। এর একটা রেশিও আছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন কারণে যদি ক্যালসিয়াম, মিনারেলস; মেইন হচ্ছে ক্যালসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাট্রিক্সের রেশিও যদি কমবেশি হয়, বোন ডেনসিটি কমে যায়, বোন পোরস হয়ে যায়। এ জন্য অস্টিওপোরসিস বলা হয়।
ডা. মহীউদ্দীন বলেন, পোরসিস মানে ছিদ্র ছিদ্র হয়ে যাওয়া। বোনসের ভেতরে অসংখ্য সুক্ষ্ম ছিদ্র এমনিতেই থাকে। কিন্তু সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এটা যখন আরও বেশি হয়ে যায়, ক্যালসিয়াম কমে যায়, ম্যাট্রিক্সটা তো ঠিকই থাকে, বোনসটা যে পরিমাণ চওড়া, সেটা থেকেই যায়। কিন্তু ক্যালসিয়ামটা কমে যাওয়ার জন্য বোনসটা কিছুটা ভঙ্গুর হয়ে যায়। ফলে পঁচিশ বছরের ছেলে যদি পড়ে যায়, যে রকম ভাঙবে না, কিন্তু পঁচাত্তর বছরের একজন যদি আস্তে করে পড়ে যায়, তখন ফ্র্যাক্সচার হয়ে যাচ্ছে। এই যে একজনের ভাঙছে না, একজনের ভাঙছে, এটাই অস্টিওপোরসিস। এটাই হাড়ের ক্ষয় রোগ।
ভিটামিন ডেফিসিয়েন্সি বা ক্যালসিয়াম, ফসফরাসের ডেফিসিয়েন্সির কারণে কি অল্প বয়সি যারা রয়েছে, তাদের অস্টিওপোরসিস হওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে কি না, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. মহীউদ্দীন বলেন, তা তো কিছুটা থাকেই। যেহেতু ক্যালসিয়াম ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। কারও অল্প বয়সে যদি ক্যালসিয়াম... যে মেটাবলিজম... আমরা যে জটিল উপায়ে খাচ্ছি, পেটে যাচ্ছে, পেট থেকে রক্তে অ্যাবজর্বশন হচ্ছে, তারপর ওখান থেকে লিভারে যাচ্ছে, লিভার থেকে কিডনিতে যাচ্ছে; তো এই যে পেট থেকে অ্যাবজর্বশন হওয়া, এখানে ঝামেলা হতে পারে। একজন খাচ্ছে অ্যাবজর্ব হচ্ছে, আরেক জনের হচ্ছে না। আবার আমরা যে ক্যালসিয়াম খাই, শতভাগ অ্যাবজর্বশন হয় না। তারপর এটা লিভারে কনভার্ট হয়। তারপর সেটা কিডনিতে গিয়ে আরেক ধরনের কনভার্ট হয়। তাহলে এই যে কতগুলো জায়গা, এর ভেতর কতগুলো জায়গা... এগুলো করার জন্য বিভিন্ন এনজাইম আছে, বিভিন্ন হরমোন আছে। এর যে কোনও একটার ঘাটতি হলেই তো ঝামেলা শুরু হয়ে যায়।
হাড়ের ক্ষয় রোগ সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।